জাগো নারী


@ফৌজিয়া সুবর্না@

জাগো নারী জাতি,
এই জীবনে জামাই ছাড়াও বহুত কিছু দেখবার জানবার আছে ۔۔
খোলস থেকে বের হও ۔۔۔নিজের অস্তিত্ব খুঁজে নাও ۔۔۔জামাই জামাইর জায়গায় থাকবে ভালোবাসা ভালোবাসার জায়গায় ۔۔۔ নিজ্বস্যতায় কোন আপোষ হবে না ۔۔
শুধু একজনের জন্যে জীবন শেষ এই ধারণার জন্যে আয়ু কমে, আত্মহত্যা করে অথবা চরম মানসিক কষ্টে জীবন অতিবাহিত করে বেশিরভাগ নারীরা ۔۔এছাড়া একজন ডিভোর্সড সিঙ্গেল বা পারিবারিক নির্যাতিত মেয়েকে শুনতে হয় সে সংসার করার মন্ত্র বা কারিশমাই জানে না۔۔ পুরুষকে সন্তুষ্ট করার সব মন্ত্র মুখস্থ করার দায়িত্ব নারীর একার নয়! মাঝে মধ্যে পুরুষকেও নারীর মন জয় করার মন্ত্র শেখার পরিবেশ তৈরী করতে হবে!

কোন পুরুষের বা হাসব্যান্ড এর দেয়া character certificate অর্জন এর বৃথা চেষ্টা করো না ۔۔কিছু না পেলে এরা মেয়েদের কোনঠাসা করতে ধর্মের দোহাই দেয় অথচ নিজেরাই ধর্ম মানে না ঠিকমতো۔۔ ۔۔
এদের মধ্যে অনেকেই আবার বেগানা বেপর্দা মেয়েদের fb তে frnd req পাঠায় আবার মাঝে মাঝে ইনবক্স এ তাদের নোংরা চরিত্রও বুঝায়۔۔ পাত্তা না দিলে নারীদের পোস্টের কমেন্টে আবার ধর্মীয় বেখ্যা দিয়ে বা আজে বাজে কথা বলে মনের জ্বালা মিটায় !
অন্যদিকে fb তে নিজ id তে এসব পুরুষকে ধারাবাহিকভাবে মেয়েদের সম্পর্কে বিভিন্ন ধর্মীয় মাসালা সম্পর্কিত status দিতেও দেখা যায়! ۔ধর্মেতো সৃষ্টিকর্তা সাগরতলে আর মহাকাশে অজস্র রহস্যের খোঁজও করতে বলেছে ۔۔অথচ ভাবখানা এমন যে শুধু নারীর পর্দা ছাড়া ধর্মগ্রন্থে আর কোন টপিকই নাই! অথচ ধর্মে নারীকে যে ধরণের সম্মান দেয়ার বা আচরণের নির্দেশ আছে তা করলে এত অশান্তিই থাকে না۔۔
নারী তুমি দেনমোহরের দাবি আর বাপের বাড়ির সম্পত্তির ভাগ নিয়ে চিন্তা না করে নিজের সম্পদ অর্জনের চিন্তা করো ۔۔ এসব ক্ষেত্রে আবার নাস্তিক নারীরাও ভীষণ ধার্মিক হয়ে যায় ۔۔একবার ভাবো তো তুমি কামাই করো আর তোমার লাইফ পার্টনার বেকার ۔۔তখন তুমি কতগুলা কথা শুনাতে তাকে উঠতে বসতে ۔۔ ?!!?

বাঙালি নারী 'সংসার' এই এক জিনিস কে সুখের একমাত্র মানদণ্ড মনে করে ۔۔ এটা ঠিক থাকলে তারা succeess বা স্কুলের ভাবী সমাজে বা নিজ পরিচিত মহলে সম্পুর্না গর্বিত মহাসুখী নারী !!۔۔
আর জামাই না থাকলে বা সংসারে সুখ না থাকলে নারীরা হীনমন্যতায় ভোগে , নিজেকে চরম অসুখী ভাবে বা সমাজে হয় কোনঠাসা ۔۔ বিধবা ডিভোর্সড নারীর ইজ্জত তো পুরুষ সমাজে 'সরকারি মাল '۔۔
নারী মানেই ভোগের সামগ্রী তা বয়স সাত মাস হোক আর ৭০ বছরের বৃদ্ধা হোক ۔۔ অথচ এদের সবার নাকি পর্দা প্রয়োজন! এই বয়সী নারী দেখলেও পুরুষের কাম ভাবনা কোথা হতে আসে ? ধর্ম হতে? নাকি বিকৃত মানসিকতা হতে ? (পশুপাখিও সেক্স করার জন্যে একটা নির্ধারিত বয়সকে বেছে নেয়)

একজন বেকার বা কর্মজীবী বৌ দুজনই ঘরে বাইরে যথেষ্ট কাজ করার পরেও অনেক কটু কথা শুনতে হয় ۔۔
reality হলো এই ۔۔۔কামাই করো না ۔۔কথা শোনো ۔۔কামাই করলেও শোনো۔۔তবে তার পরিমান কম যদি তুমি শক্ত থাকো۔ ۔۔তখন কথার জোর থাকে ۔۔কথা না শুনলে 'ঘর থেকে বের হও' বলতে ভদ্র শিক্ষিত! হাসব্যান্ডরা একটুও দেরি করে না ۔۔এটাই বাস্তবতা ۔۔۔۔
সংসারের প্রতি তোমার Dedication এর মূল্যায়ন হয় না ۔۔জামাই এর উপর তুমি নির্ভরশীল এটাকেই মূল দুর্বল পয়েন্ট ধরে আঘাত হানা হয়۔۔
(শিক্ষিত হোক আর অশিক্ষিত হোক সংসারে কিছু পুরুষের শান্ত ভদ্র বৌ পছন্দ না ! যেসব বৌ দৌড়ের উপর রাখে তাদের পছন্দ ! )

নারীরা যদি নিজের quality কে গুরুত্ব দিয়ে এগিয়ে যেত তাহলে জীবন থেকে অনেকখানি ডিপ্রেশনই চলে যেত۔۔ একজন সচেতন সাবলম্বী নারী পরিবার দেশ ও জাতির সম্পদ۔۔
জীবনে সাবলম্বী হওয়া , বেস্ততা আর নিজ নিজ ধর্ম অনুযায়ী প্রার্থনা যে কোন ডিপ্রেশন বা একাকিত্ব কে সহজে ম্যানেজ করতে পারে ۔۔
অথচ একাকিত্ব ঘুচাতে কত মানসিক ডাক্তার, কত ওষুধ, কত আয়োজন ۔۔۔۔
জীবনটা অল্পদিনের মাথা উঁচু করে বাঁচো ۔۔۔
কিসের হীনমন্যতা কিসের লজ্জা? সমাজ ???সে নিজেই সবচেয়ে বড় নির্লজ্জ প্রতিষ্ঠান!

তাই একজন স্বপ্ন পুরুষ কে ঘিরেই বেঁচে থাকার সার্থকতা খোঁজা বোকামি۔۔সে তোমার বেঁচে থাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশমাত্র ۔۔তোমার জীবনের সবটুকু নয়۔۔এই স্বপ্নপুরুষদের হাতেই কোন না কোন নারীর স্বপ্ন, শরীর বা মন ধর্ষিত হয় প্রতিনিয়ত۔۔
শুনেছ কখনো একজন মার্শাল আর্ট জানা মেয়ে ধর্ষিত হয়েছে? একজন সাবলম্বী আত্মরক্ষার কৌশল জানা মেয়ে সবখানে মাথা উঁচু করে চলে۔۔তাই রাস্তায় প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়ে নারীর অধিকার আদায়ের জন্যে যখন তুমি সময় নষ্ট করো তখন কম পুরুষই সচেতন হয় ۔۔বেশিরভাগ পুরুষই লজ্জিত হওয়ার বদলে মুখ টিপে তাচ্ছিল্যের হাসি হাসে ۔۔

তাই নিজ যোগ্যতা অর্জনে সময় দাও۔۔
আর নারী অধিকারের জন্যে দাবি দাওয়া উচিত অনুচিত সব কিছুর সূত্র একটাই ۔۔জোর যার মুল্লুক তার ۔۔তাই টাকা যার জোর তার۔۔
নির্যাতন প্রতিরোধে শুধু আন্দোলন নয় মানসিক শক্তি ও আত্মরক্ষার কৌশল জানো ۔۔ নিজের ছেলেকে মেয়েদের সম্মান করতে শেখাও۔۔ মেয়েকে সাবলম্বী করে বিয়ে দাও ۔۔ তাহলে ঘরে ঘরে নির্যাতন প্রতিরোধে পাহারা দিতে হবে না ۔۔নির্যাতনের জবাবে উল্টা মাইর চলুক ঘরে ঘরে ! যদিও তার প্রয়োজনই হবে না۔۔ কারণ approch অনেক গুরুত্বপূর্ণ ۔ একটি আত্মরক্ষার কৌশল জানা মেয়ের approch আত্মবিস্বাস কে সবাই সমীহ করে চলে۔۔
আর একটি পরনির্ভরশীল ভীতু মেয়েটির নির্যাতন বা পরাজয়ের পেছনে দায়ী থাকে সর্বপ্রথমে তার নিজের পরিবার۔۔ মেয়েকে সাবলম্বী হতে শিক্ষা পূর্ণ না করা বা আর্থিক মানসিক support না দেয়া.. নির্যাতনের কথা পরিবার কে জানালে সমাজের ভয়ে মেনে নিতে বলা ও বাপের বাড়ি থেকে সাহায্য না পাওয়া একটি মেয়েকে আত্মহত্যা বা ডিপ্রেসনের দিকে ঠেলে দেয় ۔۔একটি মেয়ে একদিনেই পারিবারিক নির্যাতনের কারণে আত্মহত্যা করে না ۔۔ বরং আত্মহত্যার আগে বার বার তার পরিবারের সদস্যদের জানানোর পরেও সহযোগিতা না পেয়েই আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়۔۔ অথচ আত্মহত্যার পরে কী পরিবারের সম্মান বাড়ে ?

মোটকথা, প্রতিটা জিনিসেরই side effect আছে ۔۔নারী পুরুষ সবখানেই ভালো মন্দ আছে ۔۔কিছু সাবলম্বী নারীর স্বেচ্ছাচারিতাকে উদাহরণ হিসেবে দাঁড় করিয়ে বাকিদের থামিয়ে দেয়ার প্রবণতা সমাজে প্রচলিত ۔۔মনে রেখো দেশের সাবেক আর বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নারী ۔۔এই থামিয়ে দেয়া পুরুষের বড় একটা অংশ সারাদিন তাদের নামে স্লোগান দেয় কিন্তু!

উপরের লেখায় বার বার স্বামীর পরিবর্তে 'জামাই' শব্দটি বেবহার হয়েছে ۔۔কারণ স্বামী অর্থ প্রভু

পুরুষরা কারো বাপ্ ভাই ছেলে যাদের বীর্যের অংশে প্রতিটা নারী তৈরী ۔۔ যারা নারীকে সম্মান করে তাদের উদ্দেশে লেখাটি নয়۔۔ তবে সমাজের বেশিরভাগ পুরুষের মেন্টালিটি বিবেচনায় লেখা হয়েছে

নারীরা শপথ নাও আজ থেকে আর নির্যাতিত হবে না ۔۔ লোকলজ্জা বা সমাজের ভয়ে চুপ থাকবে না

পুরুষরা শপথ নাও আর কখনো নিজ পরিবার বা অন্য পরিবারের মেয়েদের নির্যাতন বা অসম্মান করবে না ۔۔

নারী আর পুরুষ আছে বলেই পৃথিবীটা সুন্দর۔۔ সুন্দর ভালোবাসা۔۔ না হয় সৃষ্টিকর্তা একপদই বানাতেন হয় পুরুষ না হয় নারী۔۔ নিজেকে মানুষ ভাবো ভালোবাসো۔۔ জীবনটা অল্পদিনের মাথা উঁচু করে বাঁচো۔۔


Comments

Popular posts from this blog

ইচ্ছে নেই