অনুশোচনা
একদিন দুই বন্ধু স্কুল ছুটির পর বাড়ি ফেরার পথে কথা বলছিলো
কথাগুলো ছিলো এমন....
১ম বন্ধু: স্যার আজ ক্লাশের সবার সামনে যে অপমানটাই না করলো আমায় !! আমি তো এর বদলা নিয়েই ছাড়বো।।
২য় বন্ধু: কি বলিস!!!!
১ম বন্ধু : হে,এর শোধ না তুলা পর্যন্ত আমার শান্তি হবে না।
তোকেও থাকতে হবে কিন্তু আমার সাথে।
২য় বন্ধু: কিছুটা ইতস্তত করে বলল ,আমি!!! আমি পারবোনা ,পরে জানতে পারলে আর রক্ষা নাই!!!
১ম বন্ধু:আরে... কেউ জানবেনা ।
২য় বন্ধু: কিছুটা চাপা গলায় বলে ,কি করতে চাস!!!
১ম বন্ধু :বনের পাশ দিয়ে যে রাস্তাটা গেছে স্যার বাড়ি যাওয়ার সময় ওই রাস্তা দিয়েই যাবে ওই রাস্তাটা যদি বন্ধ করে দেওয়া যায় তাহলে বিকল্প পথ হিসেবে জঙ্গলের ভেতর দিয়ে ছোট রাস্তাটা ধরে যাবে আর ওই রাস্তার পাশে একটা বেশ বড় গর্ত আছে আমরা যদি গর্তের মুখটা শুকনো পাতা দিয়ে ঢেকে দেই তবে আর বুঝতে পারবে না যে ওখানে গর্ত ছিলো।আর একবার যদি ওই গর্তে পড়ে তবে কারো সাহায্য ছাড়া আর উঠতেই পারবে না। বনের ওই পথে খুব একটা মানুষ চলাচল করে না।
যেই বলা সেই কাজ। দু'জনে দুটি বাঁশ যোগার করে মূল রাস্তার দু'পাশের দুই গাছের সাথে উপর-নিচ করে এমন ভাবে বাঁধলো যাতে কেউ আর রাস্তা পার হতে না পারে।
(এখানে বলে রাখা ভালো যে , বাঁশ নিয়ে আসার পথে তাদের সাথে অন্য আরেক সহপাঠীর দেখা হয় । সে বাঁশ প্রসঙ্গে কিছু জানতে চাইলে যা হোক কিছু একটা বলে তাদের পাশ কাটিয়ে চলে আসে ওরা।)
যথাসময়ে স্যার এলো এবং রাস্তা পার হতে না পেরে বিকল্প পথে হাঁটতে শুরু করলো এবং গর্তে পড়ে গেল বনের একটু দূর থেকে দুই বন্ধু মিলে দেখছিলো
তারা নিশ্চিত হলো যে স্যার গর্তে পড়েছে প্রথমে দুজন একটু খুশি হলেও কিছুক্ষণ পর দ্বিতীয় বন্ধুটি বলল কাজটা কি ঠিক হলো!???
১ম বন্ধু: অট্টহাসি হেসে বললো ,একদম ঠিক হয়েছে
২য় বন্ধু: একটু মলিন চেহারায় বললো ,কি করবি এখন?
১ম বন্ধু: চল এবার বাড়ি যাই
দুজনেই বাঁশ দুটো খুলে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলো।
কিছুদূর যাওয়ার পর
২য় বন্ধু: নরম গলায় বললো ..... কাজটা বোধহয় ঠিক হয়নি রে ।এখনো সময় আছে চল গর্ত থেকে স্যারকে উঠিয়ে নিয়ে আসি।নয়তো বন্য পশুর আক্রমণ হতে পারে।
আর ওই পথে তো কোন মানুষ ও খুব একটা চলাচল করে না ।যদি বড় কোন বিপদ হয়!!!!!
১ম বন্ধু: একটু ধমক দিয়েই বলে , চুপ থাকতো তুই;; প্রতিশোধ নিতে পেরেছি খুশিতে আমার আনন্দ করতে ইচ্ছে করছে ।আর তুই!!!! কি সব প্যানপ্যান করেই যাচ্ছিস্ ।। আজ সারারাত থাকতে দে ব্যাটাকে ওই জঙ্গলে তাইলেই শিক্ষা হবে , ছাত্রদের অপমান করার মজা বুঝতে পারবে।
২য় বন্ধু: মাথাটা নিচ করে চুপ করে হাঁটতে থাকে। মনের ভিতর খারাপ লাগাটা আরো প্রবল হয়ে উঠতে থাকে যেন চারদিক ঝাপসা ও দুর্বিষহ লাগতে থাকে।
তারপর দুজনেই যে যার বাড়ি ফিরে যায় ।
সন্ধ্যার পর রাত প্রায় ৮ টার দিকে এক সহপাঠী আসে ২য় বন্ধুর বাড়ি।ওই যে সহপাঠীর সাথে বাঁশ আনার পথে দেখা হয়েছিলো সে।স্যারের খোঁজ করতেই সে এসেছে।সে বললো জানিস স্যার এখনো বাড়ি ফিরেনি আর স্যারের বাড়ীর সবাই খুব কান্নাকাটি করছে ।তাকে নাকি কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না ।তুই কি কিছু জানিস স্যার কোথায় থাকতে পারে????
২য় বন্ধু : একটু আমতা আমতা করতে করতে অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে বললো আমি কি করে বলবো!!!
ওর চেহারায় কেমন যেন একটা চোর চোর ভাব ফুটে উঠলে সহপাঠী জিজ্ঞেস করে ...কিরে তুই এমন করছিস কেন!!!!???
Comments
Post a Comment